পোস্টগুলি

জুলাই, ২০২৩ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ঝাঁপান গান - বাংলার লোকউৎসব ও ঐতিহ্য

ছবি
ঝাঁপান শব্দের অর্থ হল দোলানো বা লাফানো। যেমন গাজনের বিশেষ অনুষ্ঠানে আগুন ঝাঁপ, বটি ঝাঁপ; শিব বা মনসার প্রসন্নতা বা কৃপা লাভার্থে যে শের অনুষ্ঠান তাও ঝাঁপান। ওঁরাও, মালপাহাড়ীয়া সম্প্রদায়ের মধ্যেও শব্দটি অনুরূপ অর্থে প্রচলিত। ভারতবর্ষে বহুপূজিত প্রাণী সাপ সম্পর্কিত একটি বিশেষ অনুষ্ঠান বা উৎসবের নামও 'মনসার ঝাঁপান'। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকা পর্যন্ত সাপ দেবতা রূপে বন্দিত। মনসার সঙ্গে সাপের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ায় কখনও সাপ মনসার বাহন কখনও বা অলংকার রূপে ভূষিত। সেই তোরণে মনসা কখনো সাপ বা সাপ কখনো নারী হিসেবে চিহ্নিত। পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া, বীরভূম, মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদে মনসার ঝাঁপানে তিনি জীবন্ত সাপ। মালদহ, দিশপুরের 'মনসারলাভান' একটি  চমৎকার সর্পপূজার অনুষ্ঠান। বিষ্ণুপুরের ঝাপান অনুষ্ঠানটি একটি ঐতিহ্যপূর্ণ রোমর্ষক জীবন্ত সর্প বিষয়ক অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানটি হয় শ্রাবণ সংক্রান্তিতে। এইদিন মল্লরাজদের মন্দির চাতালে দলে-দলে বেদে-বেদেনী সাপ নিয়ে নানা রকম খেলা দেখান। ওস্তাদ-সাপুড়ের বাঁশী আর ডুগডুগির তালে বিষধর সাপের সর্পিল লতানো দেহও নৃত্যের উন্মাদনায়...

বাংলার পুতুল - বাংলার লোকশিল্প

ছবি
বাঁকুড়া জেলার ডিহর, পোখন্না, মেদিনীপুর জেলার তমলুক, ২৪ পরগণা জেলার চন্দ্রকেতু গড়, দিনাজপুরের বাণগড়, রাজসাহী জেলার পাহাড়পুর প্রভৃতি অঞ্চলের বেশ কিছু সংখ্যক স্তূপ ও ভগ্নস্তূপ উৎখননের ফলে যে সব প্রাচীন মৃৎমূর্তি পাওয়া গেছে সেগুলি আমাদের দেশের পুতুল-ঐতিহ্যের আদি নিদর্শন হিসাবে স্মরণীয়। দেববিশ্বাস, লোকাচার, উপাচার ও মানতের সঙ্গে পুতুল যে কিভাবে যুক্ত তার বিস্তৃত উদাহরণ আছে পুরুলিয়া,বাঁকুড়া ও বীরভূম জেলায়। বৃক্ষতলে, গ্রাম থানে, লৌকিক দেব-দেবীর 'মাড়ে' মাটির ঘোড়া, হাতি সাজিয়ে দেবার রীতি আজও প্রচলিত আছে। লোক বিশ্বাসের এই উৎস ও স্রোত মুসলমানদের দরগা, আদিবাসী সাঁওতাল মুণ্ডাদের দেওয়া থানে বিস্তৃত। বোঙা হাতি আদিবাসীরা সেই কারণে তৈরি করে। মাটির ঘোড়ার চারুকলার শ্রেষ্ঠত্ব বাঁকুড়া জেলার পাঁচমুড়ায় দেখা যায়। তাছাড়া রাজগ্রাম, স্যান্দরা, মুরলু, সোনামুখী, কেয়াবতী অঞ্চলেও বিচিত্র গড়নের মাটির ঘোড়া দর্শনীয় বস্তু। কাঠের বা পাথরের ঘোড়াও এখানের পুতুলশিল্পের আধুনিক নমুনা হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। মাটির ভাদু পুতুল রাঢ় অঞ্চলের প্রায় সর্বত্র দেখা যায়। বিশেষ দর্শনীয় 'কোলে-পো কাঁখে...

বাংলার মুখোশ - বাংলার লোকশিল্পের একটি অনন্য অধ্যায়

ছবি
বর্তমান বিভক্ত বাঙলার পশ্চিমাংশে অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গে বেশ কয়েকটি লোকনৃত্যে মুখোশের ব্যবহার আছে। পশ্চিম থেকে পুবের দিকে এগিয়ে মধ্যবঙ্গ হয়ে উত্তরে হিমালয় পর্যন্ত পৌঁছালে আমরা ছৌ, রাবণ কাটা, গম্ভীরা, কালীকাচ, মুখাখেল, গমীরা ইত্যাদি সমতলের বেশ কয়েকটি নাচে মুখোশের ব্যবহার লক্ষ করি। এছাড়াও দার্জিলিং জেলার পার্বত্য অংশে 'মহাকালী লাখে', 'মিঙ্গীছম', 'চমরীছম' ইত্যাদি কয়েকটি নৃত্যেও মুখোশ ব্যবহৃত হতে দেখি। এই সব মুখোশ প্রধানত কাগজের মণ্ড, কাঠ এবং মাটি দিয়ে তৈরি হয়। কোন কোনটিতে রয়েছে পিচবোর্ড অথবা পাতলা টিনের ব্যবহার। প্রসঙ্গত বলা ভালো যে, বাঙলার মুখোশের আলোচনায় আমরা কেবল সমতলের নৃত্যে ব্যবহৃত মুখোশগুলির বিষয়েই আমাদের বক্তব্য সীমাবদ্ধ রাখবো। বাংলার মুখোশ ব্যবহারের রীতিকে আমরা মূলত তিন ভাগে ভাগ করতে পারি : আচার মূলক, প্রমোদমূলক ও মিশ্র। ১. কিছু ধর্মীয় আচার ও অনুষ্ঠান উপলক্ষে লোকসমাজে নৃত্যের প্রচলন আছে। সেই অনুষ্ঠানগুলি নির্দিষ্ট তিথি, বার মেনে এবং কোন না কোন লোকদেবতার পূজার আচার অনুষঙ্গে পালিত হয়। সে-গুলিকেই আমরা 'আচার মূলক মুখোশ' নৃত্য বলেছি...

বাবরের প্রার্থনা কবিতার ভাববস্তু ও কবিতায় কবির পিতৃসত্তার পরিচয়

ছবি
ভূমিকা বাবরের প্রার্থনা কবিতাটি আবুল ফজল বর্ণিত বাবরের শেষ জীবনের কাহিনিকে কেন্দ্র করে রচিত হয়েছে। ওই বর্ণনা থেকে ও বাবরের আত্মজীবনী বাবরনামা থেকে জানা যায় মোঘল সম্রাট বাবরের জীবনের নানান কথা। সেখান থেকেই জানা যায় বাবরের পুত্র হুমায়ন গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে বাবর আল্লার কাছে তার নিজের জীবনের বিনিময়ে পুত্রের আরোগ্য কামনা করেছেন। এর পর হুমায়ন ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠলেও বাবর অন্তিমশয্যা গ্রহণ করেছেন। বাবরের মৃত্যু সম্পর্কে এই লোকপ্রসিদ্ধ ঘটনাকে অবলম্বন করে শঙ্খ ঘোষ বাবরের প্রার্থনা কবিতাটি রচনা করেন। ইতিহাসের এই তথ্য থেকে জীবন রস সঞ্চয় করে কবির জীবন দর্শন প্রকাশিত হয়। এর পিছনে আরও একটি কারণ আছে, যা কবির ব্যক্তিজীবনের সাথে যুক্ত। কবির বড় মেয়ে একবার গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। চিকিৎসাতেও কোনো সুফল মেলেনি। কবি এই ঘটনায় খুবই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। বাবরের প্রার্থনা কবিতাটি রচনার পিছনে মেয়ের এই অসুস্থতার বিষয়টি ভূমিকা গ্রহণ করেছে বলা যায়।  কবিতাটির বিষয়বস্তু সমগ্র কবিতাটিতে বাবরের পিতৃসত্তা প্রধান হয়ে উঠেছে। তিনি তার একমাত্র পুত্রের আরোগ্য কামনায় আল্লার ...

যদি নির্বাসন দাও কবিতার সারমর্ম ও কবির রোমান্টিক চেতনা ও স্বদেশপ্রীতির পরিচয়

ছবি
ভূমিকা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের যদি নির্বাসন দাও কবিতাটি একটি সার্থক স্বদেশ প্রেমমূলক কবিতা। এই কবিতার প্রেক্ষাপটে আছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ। বাংলাদেশের মাদারীপুরে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্ম। জন্মভূমি বাংলাদেশের প্রতি এক প্রগাঢ় মমত্ববোধ থেকেই এই কবিতার জন্ম। পাকিস্তানী বর্বর সেনাবাহিনীর দ্বারা বাংলাদেশের মানুষ শোষিত ও অত্যাচারিত হয়েছিল। সেই নিপীড়নে ব্যথিত কবি হৃদয় বেদনার করুণ রাগিণীকে ফুটিয়ে তুলেছেন যদি নির্বাসন দাও কবিতার বাক্ শরীরে। কবিতাটির একদিকে যেমন স্বদেশভূমির প্রতি কলকাতার নাগরিক কবির মমত্ববোধ প্রকাশিত হয়েছে, ঠিক তেমনই লক্ষ করা যায় কবিমনের ক্ষোভ মিশ্রিত অন্তর্লীন বেদনাকে। যা কবিতাটির পরতে পরতে আমরা লক্ষ করি।  কবিতাটির বিষয়বস্তু কবি বাংলাদেশকে ছেড়ে এসে এপার বাংলার রাজধানী কলকাতায় নাগরিক জীবন যাপন করলেও স্বজনভূমিকে ভুলতে পারেননি। যেখানে তিনি শৈশবে বেড়ে উঠেছেন, সেই মাটিকে ভোলা এত সহজ নয়। তিনি দেখেছেন যে, তার জন্মভূমি আজ শত্রুর কবলে পড়ে আজ সৌন্দর্যহীন হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের মাটি, আকাশ, বাতাস, মেঘ, নদী, সাড়ে তিন হাত ভূমিকে কবি ভুলতে পারেননি। "বিষন্ন...

শাশ্বতী কবিতায় প্রেম ভাবনার পরিচয়

ছবি
ভূমিকা আধুনিক বাংলা কবিতার জগতে সুধীন্দ্রনাথ দত্ত নিঃসন্দেহে একজন স্মরণীয় কবি। দার্শনিক গভীরতা, শব্দ নির্মাণ, শব্দ প্রয়োগের দক্ষতা, কাব্যের বিষয়ভাব ও গঠন বিষয়ের সচেতনতা তার কবিতাকে এক পৃথক শিল্পসৌকর্য দান করেছে। অন্যান্য কবিদের মতোই এই কবিও প্রেমচিন্তাকে পরিত্যাগ করেননি বরং প্রেম তাঁর প্রজ্ঞার আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে। কবিতাটির বিষয়বস্তু শাশ্বতী কবিতার তিনটি স্তবকের প্রথমটিতে প্রাকৃতিক পরিবেশের বর্ণনা করা হয়েছে। যে পরিবেশে সহজেই প্রিয়তমার স্মৃতি জেগে ওঠে। বর্ষা ঋতুর অবসানে যখন শরতের আগমনী ধ্বনিত হচ্ছে প্রকৃতির বুকে তখন কবি মনেও যেন বিরহভার মচিত হয়ে মুকুলিত হয়েছে মিলনের শেফালী। এমনই এক পরিবেশে কবির মন চলে গেছে অতীত স্মৃতি রোমন্থনে- "পশ্চাতে চায় আমারই উদাস আঁখি ; একবেণী হিয়া ছাড়ে না মলিন কাঁথা।" একবেণী হয়ে শয্যালগ্ন থাকা হলো নায়িকার বিরহের লক্ষণ। কবির হৃদয়ও যেন প্রাচীন নায়িকাদের মত বিরহে কাতর হয়ে উঠেছে। কবিতার দ্বিতীয় স্তবক শুধু স্মৃতির উদ্ভাসন। এখানে তিনি অতীতের মিলন সুখের স্মৃতিচারণা করেছেন। আজকের এই পরিবেশের মতোই বহুকাল আগের এক রাতে- "সে এসে সহসা হাত রে...

বিসর্জন নাটক সম্পর্কে কয়েকটি অভিমত - সুখময় মুখোপাধ্যায় (সম্পাদিত)

ছবি
→ রবীন্দ্রনাথ : শান্তিনিকেতনে অধ্যাপনাকালে 'বিসর্জন' এই নাটকের নামকরণ কোন ভাবকে অবলম্বন করা হয়েছে? আমরা দেখতে পাই যে নাটকের শেষে রঘুপতি প্রতিমা বিসর্জন দিলেন, এই বাইরের ঘটনা ঘটল। কিন্তু এই নাটকে এর চেয়েও মহত্তর আর এক বিসর্জন হয়েছে। জয়সিংহ তাঁর প্রাণ বিসর্জন দিয়ে রঘুপতির মনে চেতনার সঞ্চার করে দিয়েছিল। সুতরাং প্রতিমাবিসর্জন এই নাটকের শেষ কথা নয়, কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা হল জয়সিংহের আত্মত্যাগ; কারণ, তখনই রঘুপতি সুস্পষ্টভাবে এই সত্যকে অনুভব করতে পারল যে, প্রেম হিংসার পথে চলে না, বিশ্বমাতার পূজা প্রেমের দ্বারাই হয়। এই মৃত্যুতে সে বুঝতে পারল যে, সে যা হারালো তা কত মূল্যবান। ছাগশিশুর পক্ষে প্রাণ কত সত্যজিনিষ সে কথা অপর্ণাই বুঝেছিল কিন্তু রঘুপতির পক্ষে তা বুঝতে সময় লেগেছিল। এই নাটকে বরাবর এই দুটি ভাবের মধ্যে বিরোধ বেধেছে— প্রেম আর আর প্রতাপ। রঘুপতির প্রভুত্বের ইচ্ছার সঙ্গে গোবিন্দমাণিক্যের প্রেমের শক্তির দ্বন্দ্ব বেধেছিল। রাজা প্রেমকে জয় করতে চান, রাজপুরোহিত নিজের প্রভুত্বকে। নাটকেরশেষে রঘুপতিকে হার মানতে হয়েছিল। তার চৈতন্য হল, বোঝবার বাধা দূর হল, প্রেম হল জয়য...

হরপ্পা সভ্যতার সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় জীবন : রচনাধর্মী জ্ঞানমূলক প্রশ্ন

ছবি
ভূমিকা হরপ্পা সভ্যতার আবিষ্কার ভারতের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী ঘটনা। এযাবৎ জানা ছিল আর্য সভ্যতাই ভারতের প্রাচীনতম সভ্যতা। বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে সিন্ধু উপত্যকায় খননকার্যের ফলে এ ধারণা যে ভুল তা যেমন প্রমাণ হয়েছে, তেমনি ভারতীয় সভ্যতার প্রাচীনত্বও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। (ক) সামাজিক জীবন : প্রথমত, শহরের মধ্যস্থলে পাকা বাড়ি ও প্রান্তসীমায় কুঁড়েঘর বা কাঁচা বাড়ির অবস্থান দেখে হরপ্পা সভ্যতায় ধনী-দরিদ্রের অস্তিত্ব ছিল বলে ধারণা করা যায়। সমাজে প্রভাবশালী শ্রেণি ছিল ধনী, পুরোহিত, বণিক ও মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়। শ্রমিকরা ছিল পুরোহিত ও ধনী সম্প্রদায়ের ক্রীতদাস। ঐতিহাসিক গর্ডন চাইল্ডের মতে, হরপ্পায় শ্রেণিবৈষম্য অত্যন্ত প্রকট হয়ে উঠেছিল। দ্বিতীয়ত, সুতি ও পশমের দুই অংশবিশিষ্ট পোশাকের প্রচলন ছিল। নারী পুরুষ উভয়েই অলংকার পরিধান করত। নারীদের প্রধান অলংকার ছিল কানপাশা, কোমরবন্ধ ও কণ্ঠহার। তৃতীয়ত, যুদ্ধাস্ত্রের মধ্যে প্রধান ছিল কুঠার, বর্শা, তিরধনুক ইত্যাদি। চতুর্থত, এই সভ্যতার নগর পরিকল্পনা স্থানীয় অধিবাসীদের স্বাস্থ্য সচেতনতারও পরিচয় বহন করে। পঞ্চমত, হরপ্পা সভ্যতার জনসংখ্যা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধ...

জাতিসংঘ ও সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের মধ্যে তুলনামূলক আলোচনা

ছবি
ভূমিকা বিশ শতকের বিশ্ব-রাজনীতিতে দুটি মহাযুদ্ধের পরেই বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য দুটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গঠনের প্রচেষ্টা দেখা যায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর জাতিসঙ্ঘ (League of Nations) ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ (UNO) এই প্রচেষ্টার দুটি সমধর্মীয় পদক্ষেপ। উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অনেক মিল পরিলক্ষিত হয়, দোষ-গুণ উভয়ের মধ্যে একইরূপ দেখা যায়। একই কারণেই অনেক ঐতিহাসিক জাতিপুঞ্জকে জাতিসংঘের একটি অনুকরণ মাত্র বলে মনে করেন এবং উভয়ের মধ্যে কোনো মূলগত পার্থক্য নেই। ঐতিহাসিক Schuman বলেছেন, “The United Nations Organisation is the League of Nations in a new guise," কিন্তু এই অভিমত সম্পূর্ণ সমর্থনযোগ্য নয়। জাতিসংঘ ও জাতিপুঞ্জের মধ্যে যেমন অনেক মিল আছে, তেমনি অনেকক্ষেত্রে পার্থক্যও আছে। 🔘সামঞ্জস্য :   উভয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, (১) উভয়েই যুদ্ধকে রোধ করে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য নিয়ে সৃষ্টি হয়েছিল, উভয়েই বিশ্বশান্তি রক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল, (২) উভয় সংগঠনেই বিজয়ী শক্তিবর্গের প্রাধান্য বজায় রাখা হয়ে...