বিপত্তারিণী ব্রত কারা করেন?
বাঙালির ব্রতচর্চায় বিপত্তারিণীর নাম কারো অজানা নয়। গ্রাম বাংলার প্রায় ঘরে ঘরে এই পুজো, স্ত্রী পুরুষ নির্বিশেষে সবাই করে থাকে। যুবক-যুবতীরাও অনেক সময় করে থাকে। এছাড়া যশোদা যখন কৃষ্ণকে গোটে পাঠাতেন তখন দুর্গা নাম জপ করে পাঠাতেন। কৃষ্ণ কোন বিপদে পড়লে দুর্গার নাম স্মরণ করতেন। সব বিপদহরা ওই নামের মহিমায় বিপদ তখন আর বিপদ থাকতো না। কালীয়দমনের সময় কৃষ্ণ দুর্গার স্মরণ নিয়েছিলেন। আসলে দেবী চণ্ডী বিপদ থেকে উদ্ধার করেন নানান রূপে তাই তার নাম বিপত্তারিণী।বিপত্তারিণী ব্রত পালনের নিয়ম ও উদ্দেশ্য
কেউ কেউ সারাদিন নির্জলা থেকে সন্ধ্যাবেলা সাবু ফলমূল খায়। আবার কেউ কেউ দুপুর বারোটার পর লুচি তরকারিও খায়। সারাদিনে একবার খাওয়ার নিয়ম, তাই একবার খায়। মন শুদ্ধ করলেই হল। খাওয়াটা বড় কথা নয়। গ্রামেগঞ্জে শহরে খুব কম বাড়িই আছে, যে বাড়ির কেউ এই ব্রত করে না। গ্রাম বাংলায় বহুল প্রচলিত এই ব্রত। এই ব্রত করতে হলে আগের দিন নিরামিষ খেতে হয়। পরের দিন নির্জলা থেকে নয় রকম ফল দিয়ে পূজা দিতে হয়। শহরাঞ্চলের লোকেরা কালীঘাট বা কোনো কালিবাড়িতে এই পুজো দেয়।
বিপত্তারিণী ব্রতের পদ্ধতি
গ্রামের লোকেরা এক বাড়িতে অনেকে মিলে পুজো দেয়। পুরোহিত দিয়ে এই পূজা করার নিয়ম। লাল রংয়ের সুতোয় ১৪ টি গিট দিয়ে দেবীর কাছে রেখে পুজো করা হয়। পূজার পর পুরুষরা ডান হাতে ও মহিলারা বাঁ হাতে সেটি বাঁধেন। পরিবারের ব্রতী নয় এমন সব স্ত্রী পুরুষও এই ডুরি বাঁধেন। এই ডুরি বাঁধলে সবাই বিপদ থেকে মুক্তি পান এবং গৃহস্থের মঙ্গল হয়। মানুষের বিশ্বাসে আর ভক্তিতে এই ব্রত অনুষ্ঠান বাঙালি সংস্কৃতির একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন