বিসর্জন নাটকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য | WBPSC বাংলা প্রশ্ন উত্তর

নাট্যকার পরিচিতি

বাংলা সাহিত্যে কবি রবীন্দ্রনাথ (১৮৬১-১৯৪১) একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক এবং সাহিত্য সমালোচক। বাংলা সাহিত্যের এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যেখানে তিনি বিচরণ করেননি। আপন প্রতিভার গুণে তিনি সব ক্ষেত্রেই নতুন কিছু লিখেছেন যা বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে। তাঁর প্রথম কবিতা ‘হিন্দুমেলার উপহার' ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে হিন্দুমেলায় পঠিত হয়। প্রথম কাব্য 'বনফুল' (১৮৭৬) হলেও তাঁর প্রথম মুদ্রিত কাব্যগ্রন্থ ‘কবিকাহিনী' (১৮৭৮) । এরপর একে গ্রন্থিত হয়েছে তাঁর নানা কাব্য। কথাসাহিত্যেও তিনি নতুন পথ দেখিয়েছেন বাংলা সাহিত্যকে। তিনিই প্রথম সার্থক ছোটোগল্পের রূপকার। কাব্য, প্রবন্ধ, উপন্যাস বা ছোটোগল্পের পাশাপাশি তিনি বাংলা নাট্যসাহিত্যের ধারাতেও এনেছেন নতুনের ছোঁয়া। কবির লেখা প্রথম নাটক ‘রুদ্রচণ্ড'। এরপর একে একে রচিত হয়েছে নানা শ্রেণির নাটক। বাংলা নাট্যসাহিত্যে রূপক-সাংকেতিক তত্ত্ব নাটকের তিনিই প্রথম সার্থক স্রষ্টা। তাঁর বিভিন্ন শ্রেণির নাট্য তালিকায় আছে - ‘চিত্রাঙ্গদা’, ‘রক্তকরবী', 'রাজা', 'বিসর্জন', ‘ডাকঘর’, ‘অচলায়তন’, ‘তাসের দেশ’, ‘চিরকুমার সভা' ইত্যাদি। লিখেছেন অসংখ্য গান। শুধু সাহিত্যে বা সংগীতে নয়, চিত্রকলা, অভিনয়েও তাঁর ভূমিকা মুগ্ধ করে আমাদের সকলকেই।

গ্রন্থ পরিচিতি


রবীন্দ্রনাথের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নাটকগুলির মধ্যে বিসর্জন (১৮৯০)

একটি। কবি রচিত 'রাজর্ষি' (১৮৮৭) উপন্যাসের গল্পাংশ

অবলম্বনে রচিত এই নাটক। “হিংসার উপর প্রতিষ্ঠিত যুক্তিহীন ধর্মাচার কখনো প্রকৃত ধর্মের অঙ্গ হইতে পারে না-ইহাই নাটকের প্রতিপাদ্য তত্ত্ব।”—নাটকটির মূল বক্তব্য সম্পর্কে এই কথা লিখেছেন নাট্য সমালোচক ড. অজিতকুমার ঘোষ। নাটকে আছে দুই বিরুদ্ধ শক্তির প্রবল দ্বন্দ্ব। একদিকে প্রেম, অন্যদিকে প্রথা এই দুইয়ের সংঘর্ষে পরিশেষে প্রেমের জয় ঘোষিত হয়েছে। এই নাটকে।

>> নাট্যবস্তুর উৎস: কবির রাজর্ষি উপন্যাসের প্রথম আঠারো পরিচ্ছেদ এবং বত্রিশ, তেত্রিশ, ছত্রিশ ও সাঁইত্রিশ সংখ্যক পরিচ্ছেদের কিছু অংশ ।

>> মোট অঙ্ক সংখ্যা: পাঁচটি

>> মোট দৃশ্য সংখ্যা: একুশটি

>> সর্বাধিক দৃশ্যস্থান: মন্দির (মোট দৃশ্য -৯)

>> অন্যান্য দৃশ্যস্থান ও তার সংখ্যা: রাজসভা - ১, অন্তঃপুর - ১, মন্দির সম্মুখস্থ পথ - ১, মন্দির প্রাঙ্গণ - ২, প্রাসাদ- কক্ষ - ২, অন্তঃপুরকক্ষ - ২, মন্দির সোপান - ১, বিচারসভা ->, প্রাসাদ - ১

>> মোট চরিত্র সংখ্যা: এগারোটি

>> মোট গানের সংখ্যা: পাঁচটি (অপর্ণা - ২, জনতা - ২. জয়সিংহ -১)

>> চরিত্রের কণ্ঠে প্রথম গান: প্রথম অঙ্কের তৃতীয় দৃশ্যে অপর্ণার কণ্ঠে। গানটি হল “আমি একলা চলেছি এ ভবে”।

>> উৎসর্গ: সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুরকে

>> প্রথম সংস্করণ: ১২৯৭ বঙ্গাব্দে বা ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দে

>> শেষ সংস্করণ: ১৩৩৮ বঙ্গাব্দে বা ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে

>> গ্রন্থিত: বিশ্বভারতী প্রকাশিত রবীন্দ্র রচনাবলির প্রথম খন্ড

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কলকাতার যীশু কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা বিচার ও সংবাদধর্মীতা

মধুসূদন দত্তের বীরাঙ্গনা কাব্যের নামকরণের সার্থকতা বিচার

ঘোড়সওয়ার কবিতার সম্পূর্ণ বিষয়বস্তু ও আধুনিকতার লক্ষণ