বাংলা ইন্টারভিউ সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস্ • WBCSC | WBPSC | WBSSC Bangla Interview Tips

ইনটারভিউ প্রস্তুতি:


ঘুম থেকে উঠেই শরীর ও মনকে আগে সতেজ করে নিন। মনের মধ্যে যেন কোনোরকম টেনশন বা উদ্-বেগ না থাকে। মনে রাখবেন উদবেগ বা চাপা টেনশন থাকলে আপনি বোর্ডের সামনে নিজের বক্তব্য ঠিকমতো প্রকাশ করতে পারবেন না। মন তাজা রাখতে হালকা একটু প্রাণায়াম বা যোগাভ্যাস করে নিতেও পারেন।

পোশাক ও সাজসজ্জা:


ইনটারভিউ দিতে যাওয়ার সময় আপনার পোশাক হবে রুচিশীল। কেমন পোশাক পরবেন? এক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ, ছেলেরা সাদা বা হালকা রঙের জামার সঙ্গে কালো প্যান্ট পরতে পারেন। মহিলাদের জন্য যথাযথ হবে রুচিসম্মত শাড়ি। হাতে উভয়েই ঘড়ি ব্যবহার করবেন। হাতে বা গলায় কোথাও কোনো তাবিজ বা মাদুলিজাতীয় কিছু ব্যবহার করবেন না। অধিকমাত্রায় গহনা ব্যবহার করাও উচিত হবে না, একান্তই করতে হলে অতি সামান্য।

ইনটারভিউ সেন্টারে পৌঁছোনো:


ইনটারভিউ সেন্টারে আপনার উপস্থিতির সময় হিসেব করে অন্তত এক ঘণ্টা আগে বাড়ি থেকে বেরোনো উচিত। বাড়ি থেকে এক্সাম সেন্টার যাওয়ার সময় অবশ্যই দু-তিনটি নিউজ পেপারে চোখ রাখুন। কাজে দিতে পারে। যথাসময়ে এক্সাম সেন্টারে আপনার উপস্থিতি জানান দিন। আপনার চালচলন ও আচরণ হোক মার্জিত ও ভদ্র। এরপর নির্দেশমতো অপেক্ষা করুন যথাস্থানে। কোনোপ্রকারের টেনশন মনে আসতে দেবেন না। আপনি ভাবতে থাকুন, আপনি অপেক্ষা করছেন আপনার সফলতার দোড়গোড়ায়। একটা ধাপ শুধু বাকি। মনে জাগুক দৃঢ় প্রত্যয়—“যদি আজ একজনও চূড়ান্ত পর্যায়ে সাফল্য পায় তো সে আমি।”

অপেক্ষার অবসান ও ইনটারভিউ কক্ষে প্রবেশ:


একসময় আপনার অপেক্ষার অবসান ঘটবে। আপনার ডাক পড়বে ভেতরে যাওয়ার। ডাক শুনেই মনে প্রথমে একটা কোথাও চাপা টেনশন আসতে চাইবে। কিন্তু আপনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ যে, মনে টেনশন আসতে দেবেন না। তাই ওই টেনশন স্থায়িত্ব পাবে না। আপনি ভেতরে যেতে প্রস্তুত হবেন। ভেতরে যাওয়ার আগে অনুমতি নেবেন – আসতে পারি' বা 'আসব' ইত্যাদি। অনুমতি পেলে তবেই ইনটারভিউ কক্ষে প্রবেশ করুন। অনেকে ভেতরে ঢুকেই চেয়ারে বসে পড়েন। এমনটা করবেন না। বসার আগে প্রশ্নকর্তাদের অনুমতি নিন অথবা তাঁদের নির্দেশের অপেক্ষা করুন। বসার অনুমতি বা নির্দেশ পেলে 'ধন্যবাদ' জানিয়ে নির্দিষ্ট চেয়ারে বসুন।

আপনি চেয়ারে বসলেন। আপনার হাতে আছে ফাইল বা ব্যাগ। কোথায় রাখবেন ভাবছেন। সামনেই তো টেবিল। ওখানে? না। আপনার কোলেই রাখুন। অথবা টেবিলে রাখার আগে অনুমতি চেয়ে নিন। এরপর প্রশ্নকর্তারা আপনার বায়োডাটা বা টেস্টিমোনিয়ালস দেখতে চাইতে পারেন। ধীরতার সঙ্গে সেসব দেখান।

প্রশ্নোত্তর পর্ব:


এরপর শুরু হবে প্রশ্নোত্তর পর্ব। আপনাকে আপনার বিষয়-সহ বিদ্যালয়, ছাত্রছাত্রীদের প্রতি আপনার মনোভাব, শিক্ষা সংক্রান্ত সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা, প্রকল্প, আপনার প্রিয় ব্যক্তি, হবি ইত্যাদি জানতে চাওয়া হতে পারে। সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিন স্থিরতার সঙ্গে, ধৈর্যের সঙ্গে। উত্তর দেওয়ার আগে ভাবুন, পরে নয়। দ্রুততার সাথে উত্তর দিতে গেলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। সেক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করবেন না। প্রশ্নকর্তার কোনো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় প্রশ্নকর্তার দিকে তাকিয়ে উত্তর দিন। চেষ্টা করবেন উত্তর প্রদানকালে আপনার দৃষ্টি যাতে উপস্থিত অন্যান্য প্রশ্নকর্তার দিকেও যায়। উত্তর দেওয়ার সময় কখনওই আপনি চেয়ার, টেবিল, দেয়াল বা মাটির দিকে তাকাবেন না। যদি আপনার দেওয়া উত্তরে তাঁরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন তাহলে তাদের ধন্যবাদ জানান। কোনো প্রশ্নের উত্তর না জানা থাকলে তা সরাসরি জানিয়ে দিন এবং না জানার জন্য দুঃখ প্রকাশ করুন। কিন্তু মোটেও জানতাম, ভুলে গেছি' এই জাতীয় মনোভাব বা আচরণ করবেন না। অনেক সময় প্রশ্নকর্তারা আপনার ধৈর্যের পরীক্ষা নিতে চান। আপনাকে নানাভাবে উত্তেজিত করার চেষ্টাও করা হতে পারে। আপনি বিচলিত হবেন না, উত্তেজিত হবেন না। বরং বোর্ডের সামনে থাকাকালীন আপনার মুখে যেন স্মিতহাসি লেগে থাকে। আপনাকে যতটুকু প্রশ্ন করা হবে ততটুকুই উত্তর দিন। বেশি জ্ঞান দেখাতে গেলেই বিপদ হতে পারে। আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় ইংরেজিতে আপনি উত্তর দিন ইংরেজিতেই। যদি করা হয় বাংলায় তাহলে বাংলাতেই উত্তর দেবেন। একটা কথা মনে রাখবেন, কোনো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময়, হাতে হাত ঘষা, আঙুল ফোটানো বা মাথা চুলকানো জাতীয় কিছু করবেন না।

প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষ হলে প্রশ্নকর্তারাই আপনাকে তা জানিয়ে দেবেন। তাঁরা হয়তো বলবেন, ‘আসুন” বা “আপনি আসতে পারেন' জাতীয় কোনো কথা। আপনি উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে মার্জিত ভঙ্গিতে ঘর থেকে বেরিয়ে আসবেন।


QuotesofBengal টিম আপনাদের সকলের সাফল্য কামনা করে।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

কলকাতার যীশু কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা বিচার ও সংবাদধর্মীতা

মধুসূদন দত্তের বীরাঙ্গনা কাব্যের নামকরণের সার্থকতা বিচার

ঘোড়সওয়ার কবিতার সম্পূর্ণ বিষয়বস্তু ও আধুনিকতার লক্ষণ