মধ্যযুগের মন ও মানুষ - নন্দগোপাল সেনগুপ্ত

মধ্যযুগের মন ও মানুষ উনিশ শতকে ইংরেজশাসনের পৃষ্ঠপোষকতায় আমাদের দেশে যে নূতন শিক্ষাদীক্ষা প্রবর্তিত হয়েছিল, তার ফলে যে নূতন জীবন ও মননধারা আত্মপ্রকাশ করেছিল, তাকে রেনেসাঁস বা নবজাগরণ নাম দিয়েছেন অনেকেই। তা এক ধরনের জাগরণ ঠিকই, কিন্তু ইউরোপীয় রেনেসাঁসের সঙ্গে তার একটি মূলগত পার্থক্য আছে। ইউরোপের মানুষ সামন্তযুগের অশিক্ষা-কুশিক্ষায় যে পুরোনো গ্রিকো-রোমক সংস্কৃতির উত্তরাধিকার হারিয়ে ফেলেছিল, তাকেই নূতন করে আবিষ্কার করেন এবং তা-ই তাঁদের মধ্যে জাগায় বৈজ্ঞানিক সন্ধিৎসা ও ঐতিহাসিক বস্তুবোধ, আর এ-দুটোকে আশ্রয় করেই মানুষ নূতনভাবে তৈরি করে নেন তাঁর সংস্কৃতি—যা আসলে তাঁদের পুরুষানুক্রমিক সংস্কৃতিরই নূতন অনুবৃত্তি। কিন্তু ভারতবর্ষ উনিশ শতকে যে সংস্কৃতিকে পেল, তা হল বাইরের জিনিস এবং তা বস্তুত ভারতীয় জীবন ও মননের সঙ্গে কোনোরকমেই সম্পর্কিত নয় এবং আধুনিক শিক্ষাপ্রাপ্ত শহুরেদের বাইরে গোটা দেশের অন্তর্লোককে তা স্পর্শও করল না। ফলে সর্বতোভাবে নূতন একটা জীবনচেতনায় মূর্ত হল না তা। দেশের বৃহৎ একটা শ্রেণি রইলেন নিষ্ঠার সঙ্গে পুরোনোকে আঁকড়ে, আরও একটা শ্রেণি সমস্ত পুরোনো মূল্যমান খুইয়ে ঐতিহ্যভ...